Environmental news - আবারও তেল ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা

শ্যালা নদীতে ভাসমান ...
সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে দুর্ঘটনার শিকার তেলবাহী জাহাজ এমভি সাউদার্ন স্টার-৭ থেকে আবারও তেল ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দুর্ঘটনার সাড়ে চার মাস পরও এটি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে না নিয়ে মংলা নদীর চরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছে। জাহাজটিতে এখনো পানিমিশ্রিত প্রায় ৬০ মেট্রিক টন ফার্নেস তেল রয়েছে।
এভাবে জাহাজটি ফেলে রাখায় যেকোনো মুহূর্তে এর তেল নদীতে মিশে আবার প্রাকৃতিক বিপর্যয় শুরু হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বন্দর ব্যবহারকারী ও অন্য কার্গো মালিকেরা।
দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজকে জব্দ করে এভাবে চরে ফেলে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে মংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘যেহেতু দুর্ঘটনার পর করা দুই মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে, তাই আদালতের নির্দেশনার বাইরে আমাদের কিছু করার সুযোগ নেই।’
আর এই জাহাজের মালিক মেসার্স হারুন অ্যান্ড কোং-এর স্বত্বাধিকারী আমির হোসেন ফরিদ বলেন, জাহাজে পানিমিশ্রিত প্রায় ৬০ মেট্রিক টন ফার্নেস তেল রয়ে গেছে। দুর্ঘটনার পর ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজটি সংস্কার কিংবা মেরামত করা সম্ভব হয়নি। এখানে জাহাজটি থাকলে বর্তমানে কালবৈশাখীর মৌসুমে আবারও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। প্রায় দুই কোটি টাকার সম্পদ লবণপানি ও কাদামাটিতে নষ্ট হচ্ছে। কিন্তু মামলা-সংক্রান্ত জটিলতার কারণে এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া যাচ্ছে না।
আমির হোসেন আরও বলেন, ওই ট্যাংকারের দায়িত্বে থাকা সাত কর্মচারীও মানবেতর জীবন যাপন করছেন। যেকোনো শর্তে ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজটিকে তাঁদের জিম্মায় দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
গত বছরের ৯ ডিসেম্বর এফবি টোটাল নামের পণ্যবাহী একটি কার্গো ধাক্কা দিলে সাউদার্ন স্টার-৭ জাহাজটি শ্যালা নদীতে ডুবে যায়। জাহাজে ৩৫৭ মেট্রিক টন ফার্নেস তেল ছিল। এর বেশির ভাগ তেল নদীতে ছড়িয়ে পড়ায় সুন্দরবনসহ আশপাশের এলাকায় মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয় ঘটে। এ ঘটনা দেশে-বিদেশে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়। জাতিসংঘও এ বিষয়ে তদন্ত দল পাঠায়। জাহাজ দুটির কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়। দুর্ঘটনার শিকার জাহাজটিকে পুলিশ জব্দ করে মংলা নদীর চরে ফেলে রাখে।
গত রোববার সকালে মংলা নদীর তীরে গিয়ে দেখা যায়, যে স্থানে জাহাজটি রাখা, তার পাশে মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলের খননকাজ চলায় জাহাজটির নিচের মাটি বেশ খানিকটা সরে গেছে। এতে একটু হেলে পড়েছে জাহাজটি। তা ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে চরে ফেলে রাখায় জাহাজটিতে মরিচা পড়ে ফাটল ধরা শুরু করেছে।
মংলা বন্দর ব্যবহারকারী ও শিপিং এজেন্ট হোসাইন মোহাম্মদ দুলাল বলেন, জাহাজটি বর্তমানে নদীর চরে যে অবস্থানে আছে, তা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এর আগে শ্যালা নদীতে তেল দুর্ঘটনার কারণে মংলা বন্দর ও বন্দরসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন। আবারও যাতে এ ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটে, সে জন্য ঝুঁকিপূর্ণ জাহাজটি দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরানো দরকার।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি ক্যাপ্টেন রফিক বলেন, কোনোভাবে যদি জাহাজটির তেল মংলা নদীর পানিতে মেশে, তবে বড় ধরনের আরেকটা বিপর্যয় ঘটবে। এ ছাড়া নদীর যে স্থানটিতে দীর্ঘদিন ধরে জাহাজটিকে ফেলে রাখা হয়েছে, সেই স্থানে নাব্যতা হ্রাস পাবে। তিনি বলেন, আগের দুর্ঘটনায় মংলা বন্দরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব পড়েছিল। তাই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে সরকারের উচিত দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া।
-

Latest

Popular Posts

Popular Posts

Popular Posts