Environmental news - প্রাণী উদ্যানে গাছের প্রাণ যায় যায়

সিলেটের টিলাগড় ইকোপার্কে গাছের গোড়া কংক্রিটের ঢালাই দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে l ছবি: প্রথম আলোটিলা শ্রেণির ভূমি। ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত গাছ। চূড়ায় নির্মাণ করা হয়েছে একটি ঘর। এ ঘর সুরক্ষিত রাখতে রয়েছে সীমানাপ্রাচীর, যাতায়াতে পাকা রাস্তাও আছে। এই রাস্তা পাকা করতে সারিবদ্ধ সাতটি গাছের গোড়া পাকা করা। সীমানাপ্রাচীরের জন্য একইভাবে গাছের গোড়ায় কংক্রিটের ফাঁস পড়েছে। এ অবস্থা সিলেট নগরের টিলাগড় ইকোপার্কে।
প্রাণী উদ্যান প্রকল্পে ইকোপার্কে এ রকম স্থাপনা ও রাস্তা নির্মিত হওয়ায় গাছের বেড়ে ওঠার পরিবেশ বিপন্ন হবে বলে পরিবেশবাদীরা প্রশ্ন তুলেছেন। কিন্তু বন বিভাগ নির্বিকার। তারা কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। প্রায় ৩০ একর জায়গাজুড়ে টিলাগড় ইকোপার্ক। সিলেট নগরের উত্তর-পূর্ব দিকে এর অবস্থান। ইকোপার্কটিকে প্রাণী উদ্যানের রূপ দিতে ‘এনিমেল পার্ক’ নামে একটি প্রকল্প গত বছরের ডিসেম্বর থেকে শুরু করে বন বিভাগ। প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে দীর্ঘমেয়াদি এ প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে পাঁচটি ধাপে প্রাণী উদ্যান বাস্তবায়ন করা হবে। এতে দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে ইকোপার্ক এলাকায় তিনটি রাস্তা, সীমানাপ্রাচীর ও প্রাণী পর্যবেক্ষণের জন্য চিড়িয়াখানার আদলে ঘর নির্মাণ করা হবে।
ইকোপার্ক-সংশ্লিষ্ট বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, পার্কের ৩০ একর জায়গার মধ্যে আট একরে প্রাণী উদ্যান প্রকল্পের বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি হবে। প্রাণী উদ্যানের জন্য ময়ূর, জেব্রা, হরিণ, বনবিড়াল ও হাতি আমদানি করা হবে। এ জন্য শেড, স্টাফ ব্যারাক, বন্য প্রাণীর খাদ্যগুদাম, ড্রেনেজ, বাউন্ডারি ওয়াল ও টিকিট কাউন্টার নির্মাণের কাজ ধাপে ধাপে সম্পন্ন হবে। ইকোপার্কে গিয়ে জানা গেছে, গত প্রায় চার মাসে পার্কটির প্রবেশমুখের কিছু সীমানাপ্রাচীর, পুরোনো স্থাপনা পুনর্নির্মাণ এবং নতুন করে একটি ঘর ও টিলা শ্রেণির ভূমির ওপর একটি রাস্তা করা হয়েছে। ওই ঘর ও রাস্তায় অর্ধশতাধিক গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
গত বছরের ডিসেম্বরের দিকে রাস্তা নির্মাণকাজ শুরুর দিকে সিলেটের পরিবেশবাদী সংগঠন ‘ভূমিসন্তান বাংলাদেশ’ টিলাগড় পরিদর্শন করে প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে গাছের জন্য ক্ষতিকর হবে কি না, বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছিল বন বিভাগকে।
ভূমিসন্তান বাংলাদেশের সমন্বয়ক মোহাম্মদ আশরাফুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, গাছের গোড়া পাকা করে ফেললে গাছের বেড়ে ওঠা তো দূরের কথা, ধীরে ধীরে মরে যাওয়া ছাড়া আর কোনো পথ থাকবে না। এ প্রকল্পের প্রথম ধাপে কয়েক শ গাছের বেড়ে ওঠা ব্যাহত হবে। বন বিভাগ গাছগুলোর প্রাণ ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন দাবি করেন, তাঁকে কোনো পরিবেশবাদী সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল কি না, তিনি মনে করতে পারছেন না। তবে তাঁর ভাষ্য, ‘একটি বড় প্রকল্পের স্বার্থে এক-দুটি গাছ এ রকম হলে হতে পারে।’
-

Latest

Popular Posts

Popular Posts

Popular Posts