Current affairs - জম্মু ও কাশ্মির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা তৈরি করছে


১৬ সেপ্টেম্বরে শ্রীনগরের দু’জন বাসিন্দা বন্যার পানির মধ্য দিয়ে একটি মোটরসাইকেল ঠেলে এগিয়ে নিচ্ছে৷ প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে আরো ভালোভাবে লড়াই করতে সাহায্য করার জন্য কাশ্মির একটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা তৈরি করছে। [তাওসিফ মোস্তফা/এএফপি]

সম্প্রতি মারাত্মক বন্যার পর, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করার জন্য রাজ্য কর্তৃপক্ষ একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা নিয়েছে। বন্যার মত দুর্যোগের প্রস্তুতি নেয়া ও মোকাবেলা করার জন্য কিছুদিনের মধ্যে নিজস্ব দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা চালু করার খবরকে জম্মু ও কাশ্মিরের বাসিন্দারা স্বাগত জানিয়েছে।
  • ১৬ সেপ্টেম্বরে শ্রীনগরের দু’জন বাসিন্দা বন্যার পানির মধ্য দিয়ে একটি মোটরসাইকেল ঠেলে এগিয়ে নিচ্ছে৷ প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে আরো ভালোভাবে লড়াই করতে সাহায্য করার জন্য কাশ্মির একটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা তৈরি করছে। [তাওসিফ মোস্তফা/এএফপি]
“যদি একটি কার্যকর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা থাকতো, তাহলে গত বছরের বন্যা প্রায় ৩০০টি জীবন কেড়ে নিতে পারতো না এবং কোটি কোটি রুপির সম্পদ নষ্ট করতে পারতো না,” খবর দক্ষিণ এশিয়াকে বলেছেন শ্রীনগরে বন্যার শিকার হওয়া শওকত আহমদ দার৷
সেপ্টেম্বরের বন্যায় ২৮৩ ব্যক্তি মারা গেছে এবং ৪৪ কোটি রুপি (৭.১ মিলিয়ন ডলার) মূল্যমানের সম্পদ ধ্বংস হয়েছে।
“এটা ভালো যে, ভবিষ্যতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা এবং জীবন ও সম্পদ রক্ষা করার জন্য রাজ্য কর্তৃপক্ষ এই ধরনের একটি পরিকল্পনার গুরুত্ব বুঝতে পেরেছে,” বলেছেন দার।
টাটা ইনস্টিটিউট অব সোস্যাল সায়েন্সেস প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার মত করে এই পরিকল্পনাটি তৈরি করেছে। এতে মূলত ঝুঁকি বিশ্লেষণ, ঝুঁকিপূর্ণদের বৈশিষ্ট্য, ঝুঁকি কমানো এবং সাড়া প্রদান ও পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াগুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
“দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য হলো এই রাজ্যে দুর্যোগের প্রতি মানুষের অসহায়ত্ব কমানোর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ দক্ষতা অর্জন করা,” খবরকে বলেছেন কাশ্মিরের বিভাগীয় কমিশনার রোহিত কানসাল।
“এই পরিকল্পনার মাধ্যমে, এই রাজ্যে দুর্যোগের প্রতি দৃঢ়চিত্ততার একটি সংস্কৃতিকে প্রবর্ধন করা হবে। পরিকল্পনাটি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সবকিছু তৈরি আছে। দুর্যোগের ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সব অংশীদারদের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য এটি চেষ্টা করবে”৷
দুর্যোগ-প্রবণ
জম্মু ও কাশ্মিরের একটি বড় অংশ “সিসমিক জোনে” পড়েছে, আবার এর অনেকগুলো শহুরে এলাকা বন্যা-প্রবণ।
“পাহাড় ও নদীবেষ্টিত কাশ্মির উপত্যকা যেহেতু দুর্যোগপ্রবণ, তাই কয়েক দশক আগে থেকেই এখানে একটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা থাকা উচিত ছিল,” খবরকে বলেছেন কাশ্মির বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আজরা নাহিদ কামিলি।
“তা সত্বেও, এটা ভালো যে রাজ্য কর্তৃপক্ষ অবশেষে এই দীর্ঘ-প্রতিক্ষিত উদ্যোগটি গ্রহণ করেছে৷ সারা রাজ্য জুড়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন করা উচিত। সরকারের সবগুলো বিভাগ ও অংশীদাররা ব্যাপক সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করা উচিত এবং ভবিষ্যতের দুর্যোগগুলো কার্যকরভাবে মোকাবেলা করার জন্য লভ্য সম্পদগুলো ব্যবহার করা উচিত।
কূপওয়ারা ও রামবান বিশেষ মনোযোগ পাচ্ছে
আরো কার্যকর একটি পরিকল্পনা তৈরি করার জন্য কূপওয়ারা ও রামবান জেলার দুর্যোগ-প্রবণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করার উদ্দেশ্যে অল ইন্ডিয়া ডিজাস্টার মিটিগেশন ইনস্টিটিউট (এআইডিএমআই)-এর বিশেষজ্ঞরা একটি প্রাথমিক জরিপ শুরু করেছে।
“বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের জন্য এআইডিএমআই-এর বিশেষজ্ঞরা ১৬ জানুয়ারিতে একটি দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ অধিবেশন পরিচালনা করেছে। তারা একটি পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে কর্মকর্তাদের সাথে তাদের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করেছে এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে তাদেরকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছে,” খবরকে বলেছেন কূপওয়ারার ডেপুটি কমিশনার সৈয়দ ইতরাত হুসেইন রফিক।
“বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন ধরনের দুর্যোগ যেমন ভূমিকম্প, মানুষ ও পশুর সংঘাত এবং বন্যা-প্রবণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করবে। পরবর্তীতে, একটি বিস্তারিত পরিকল্পনা তৈরি ও বাস্তবায়ন করা হবে”৷
সেনাবাহিনীর অবদান
শ্রীনগর-ভিত্তিক সেনাবাহিনীর মুখপাত্র এন.এন. জোশি খবরকে বলেছেন যে তুষারধ্বস-প্রবণ এলাকাগুলোতে উদ্ধার অভিযানের জন্য সৈন্যদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
“মানুষকে উদ্ধার করার জন্য এগিয়ে আসার ক্ষেত্রে সেনাবাহিনী কোনো প্রচেষ্টাই বাদ রাখেনি, বিশেষ করে সীমান্ত শহরগুলোতে যেগুলোতে তুষারধ্বস দেখা যায়,” বলেছেন তিনি। “এই শীতের মৌসুমেও আমরা যে কোনো দুর্যোগ মোকাবেলা করার জন্য এবং তুষারকবল এলাকাগুলোতে মানুষের জীবন রক্ষা করার জন্য দক্ষ সৈন্যদেরকে প্রস্তুত রেখেছি”৷
-

Latest

Popular Posts

Popular Posts

Popular Posts