+ Save the Children invites applications for the following position. Manager – Partnership Operations Strengthening – Re-advertise


Save the Children is the world’s leading, independent organisation for children
Job Opening
Save the Children invites applications for the following position.
Manager – Partnership Operations Strengthening – Re-advertise
(1 position based in Dhaka)
This position within Award Management & Partnerships department is responsible for his/her capacity supports the Deputy Director Partnership in the areas of partnership management, new partner assessment, capacity strengthening and support of partners. S/he supervises a team of partnership officers who are responsible for regular monitoring and follow up with program partners. In addition, s/he has technical expertise in the area of operations strengthening to ensure that that this knowledge is shared among partners and relevant SCI staff.  The position ensures quality services to internal and external stakeholders in line with the Partnership Framework and other SCI Policies and Procedures.
For more details, please visit and apply online through http://bangladesh.savethechildren.net
Application deadline: May 11, 2015
Only short listed candidates will be invited for interview
‘Save the Children promotes diversity in its workforce’

-

+ National news - দিনে ঢাকায় বাড়ছে ১৪১৮ জন



সূত্র: বিবিএস, নিপোর্ট, ওয়াসা
ঢাকা মহানগর এলাকায় প্রতিদিন এক হাজার ৪১৮ জন মানুষ বাড়ছে৷ বছরে যুক্ত হচ্ছে গড়ে পাঁচ লাখ সাড়ে ১৭ হাজার মানুষ৷ এই হারে জনসংখ্যা বাড়তে থাকলে সাত বছর পর ঢাকায় জনসংখ্যা দুই কোটি ছাড়িয়ে যাবে৷ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এবং জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের (নিপোর্ট) বিশ্লেষণে এ তথ্য পাওয়া গেছে৷
নিপোর্টের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় বর্তমানে এক কোটি ৬৪ লাখ মানুষ বাস করছে৷ আর সারা দেশে জনসংখ্যা এখন ১৫ কোটি ৬২ লাখ৷ দেশে জনসংখ্যা বছরে ১ দশমিক ৩৭ শতাংশ হারে বাড়লেও শহর এলাকায় এই হার ৪ দশমিক ১৬ শতাংশ৷ তবে চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহী—এই তিন প্রধান শহরে বর্তমানে যত মানুষ বাস করে, তার চেয়ে বেশি মানুষ গত ১৩ বছরে বেড়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায়৷ এই সংখ্যাটি ৬৭ লাখ৷
মানুষের সঙ্গে বাড়ছে যানবাহনও৷ বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ বলছে, ঢাকায় নিবন্ধিত যানবাহন সাত লাখ ৯৭ হাজার ১৮৪টি৷ প্রতিদিন রাস্তায় নামছে ১৮০টি নতুন যান৷ কিন্তু যানজট কমছে না৷ আছে পানির সমস্যা৷ ওয়াসা সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ এলাকায় সর্বোচ্চ এক কোটি ৩০ লাখ মানুষকে প্রতিদিন পানি সরবরাহ করে তারা৷ বাকি মানুষ কীভাবে পানির প্রয়োজন মেটায়, তা ওয়াসার জানা নেই৷ এককথায় শহরে নাগরিক সেবা তলায় ঠেকেছে৷ সাত বছর পর জনসংখ্যা দুই কোটি ছাড়িয়ে গেলে নাগরিক দুর্ভোগ আরও বাড়বে৷
নগর গবেষক ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলামের মতে, ঢাকার বহুমুখী সংকট এক দিনে সৃষ্টি হয়নি৷ ঢাকার ভবিষ্যৎ নিয়ে শীর্ষ পর্যায়ে চিন্তাভাবনার অস্বচ্ছতা, পরিকল্পনা প্রণয়নে সময়ক্ষেপণ ও বাস্তবায়নে অনীহা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুর্বলতা, রাজনৈতিক অস্থিরতা, নগর প্রশাসনে বিকেন্দ্রীকরণে অনিচ্ছা এবং সম্পদের অপ্রতুলতা ও অপব্যবহার এই সংকট তৈরি করেছে৷
এই সমস্যা সমাধানের উপায় কী? দুইভাবে সমস্যা মোকাবিলার উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন জনবিজ্ঞানী ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নূর-উন-নবী৷ প্রথমত, ঢাকার বাইরে মানসম্পন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে৷ বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট-সংযোগ প্রত্যন্ত এলাকায় পৌঁছে দিতে হবে, যেন আউটসোর্সিংয়ের কাজে গ্রামের যুবশক্তিও যুক্ত হতে পারে৷ জেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোকে সমৃদ্ধ করতে হবে৷ দ্বিতীয়ত, ঢাকার নাগরিক সুবিধা বাড়াতে হবে৷
ইতিমধ্যে বিশ্বে বসবাসের সবচেয়ে অযোগ্য শহর হিসেবে ঢাকা পরিচিতি পেয়েছে৷ গত জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য ছিল৷ স্থিতিশীলতা, স্বাস্থ্যসেবা, সংস্কৃতি ও পরিবেশ, শিক্ষা ও অবকাঠামো—এই পাঁচটি বিষয়ে ৩০টি সূচক ধরে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়৷ সেখানে ১৪০টি শহরের মধ্যে সবচেয়ে অযোগ্য শহর হিসেবে বিবেচিত হয় ঢাকা৷
কেন ঢাকায় আসছে মানুষ: নিপোর্টের জ্যেষ্ঠ গবেষক সুব্রত ভদ্র বলেন, সুযোগ-সুবিধার আকর্ষণে মানুষ ঢাকায় চলে আসছে৷ একে বলা হয় ‘পুল ফ্যাক্টর’৷ আবার নদীভাঙনের মতো ঘটনায় মানুষ সব হারিয়ে বাধ্য হয়ে ঢাকায় আসছে৷ একে বলা হয় ‘পুস ফ্যাক্টর’৷ তিনি বলেন, ‘মানুষ শিক্ষার জন্য আসছে, ভিক্ষার জন্যও আসছে।’
সারা দেশে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ৮২টি৷ এর মধ্যে ৬০টি ঢাকা শহরে৷ সারা দেশে মোট ৭৫টি সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের মধ্যে ২৮টি ঢাকা শহরে৷ শুধু সংখ্যার বিচারে নয়, মানের দিক থেকেও দেশের সেরা স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় এই শহরে কেন্দ্রীভূত৷ বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে দেশের স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় এক কোটি সাত লাখ ৭৩ হাজারের কিছু বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে৷ এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩০ লাখ ৩০ হাজার (২৮ শতাংশ) শিক্ষার্থী ঢাকা বিভাগে৷
অধ্যাপক নজরুল ইসলাম ঢাকাকে বলছেন সুযোগের শহর (সিটি অব অপরচুনিটি)৷ তাঁর মতে, ১৮ লাখ পোশাকশ্রমিক, ১০ লাখ নির্মাণশ্রমিক এবং পাঁচ লাখ রিকশাচালকের জীবিকার সুযোগ করে দিয়েছে ঢাকা৷
নাগরিক সুবিধা বাড়ছে না: সরকারি হিসাবে ঢাকায় নিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা (মার্চ ২০১৪ পর্যন্ত) সাত লাখ ৯৭ হাজার ১৮৪টি৷ এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মোটরসাইকেল (তিন লাখ ১১ হাজার), প্রাইভেট কার (এক লাখ ৯৫ হাজার), মাইক্রোবাস (সাড়ে ৫৫ হাজার), ট্রাক (৩৯ হাজার), পিকআপ (৩৯ হাজার ৪০০), জিপ (২৩ হাজার ৮০০), বাস (২০ হাজার ৮০০)৷ গত চার বছরের (২০১০-২০১৩ সাল) তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রতিদিন ১৮০টি নতুন যান রাজপথে নামছে৷ কিন্তু নগরের মানুষের পরিবহন সমস্যা দূর হচ্ছে না, যানজট বাড়ছেই৷
একই সঙ্গে পানির সংকটও দিন দিন বাড়ছে৷ ওয়াটার এইডের এ দেশীয় প্রতিনিধি খায়রুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পানি সবাই পাচ্ছে৷ প্রশ্ন হলো, পরিমাণমতো ও মানসম্পন্ন পানি সবাই পাচ্ছে কি না৷ তাঁর মতে, মানসম্পন্ন প্রয়োজনীয় পানির অভাবে আছে শহরের কয়েক লাখ মানুষ৷
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই শহরের অন্যতম প্রধান সমস্যা আবাসন৷ ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ মানুষ বস্তিতে বাস করে৷ অর্থাৎ প্রায় ৫০ লাখ মানুষ ঘিঞ্জি পরিবেশে বাস করে৷ তাদের সুপেয় পানির সরবরাহ, স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ও গোসলের ব্যবস্থা নেই৷
-

+ National news - ঢাকা বিশ্বের ১১তম জনবহুল শহর

বিশ্বের ৫৪ শতাংশ লোকের বাস শহরে


জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল শহরের তালিকায় ১১তম স্থানটি দখল করেছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। তালিকায় প্রথম হিসেবে উঠে এসেছে জাপানের রাজধানী টোকিও। এর পরই রয়েছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির নাম। তৃতীয় স্থানটি দখল করেছে চীনের সাংহাই।
গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছর সারা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৫৪ শতাংশ বসবাস করে শহরে। ১৯৫০ সালে এর হার ছিল মাত্র ৩০ শতাংশ। ভবিষ্যতে শহরমুখী মানুষের এই ঢল আরও বাড়বে। ২০৫০ সালে তা হবে অন্তত ৬৬ শতাংশ। তত দিনে আরও অনেক শহর, মেগাশহর গড়ে উঠবে। বর্তমান শহরগুলো উন্নয়ন ঘটাতে হবে। অতিরিক্ত মানুষের বসবাসের উপযোগী রাখতে শহর উন্নয়নে যুগোপযোগী উদ্যোগ নিতে হবে।
টোকিওতে বর্তমানে অন্তত তিন কোটি ৮০ লাখ মানুষ বসবাস করে। ১৯৯০ সালে শহরটিতে ছিল তিন কোটি ২৫ লাখ ৩০ হাজার বাসিন্দা। নয়াদিল্লিতে বর্তমানে থাকে অন্তত আড়াই কোটি মানুষ। ১৯৯০ সালে এ সংখ্যা ছিল ৯৭ লাখ ২৬ হাজার।
সাংহাইয়ের বর্তমান লোকসংখ্যা দুই কোটি ৩০ লাখ। তালিকার চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে যথাক্রমে মেক্সিকো সিটি, সাও পাওলো ও মুম্বাই। এ তিনটি শহরের প্রতিটির লোকসংখ্যা প্রায় দুই কোটি ১০ লাখ। প্রতিবেদন অনুযায়ী ঢাকায় বর্তমানে প্রায় এক কোটি ৬৯ লাখ ৮২ হাজার লোকের বসবাস। ১৯৯০ সালে এ সংখ্যা ছিল ৬৬ লাখ ২১ হাজার মানুষ।
সবচেয়ে বেশি নগরায়ণ হয়েছে উত্তর আমেরিকায় (৮২ শতাংশ মানুষ শহরে থাকে)। এরপর রয়েছে লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ (৮০ শতাংশ)। সেই তুলনায় আফ্রিকা ও এশিয়া (যথাক্রমে ৪০ ও ৪৮ শতাংশ) প্রত্যন্ত এলাকা রয়ে গেছে। তবে ২০৫০ সালের মধ্যে এশিয়ায় বেশির ভাগ মেগাসিটি গড়ে উঠবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইউএন ওয়েবসাইট ও দ্য নিউইয়র্ক টাইমস।
-

National news - বেশি গরিব মানুষের বাস ঢাকা বিভাগে


বাংলাদেশের দারিদ্র্য মানচিত্র প্রকাশ
দেশে যত গরিব মানুষ আছে, তার এক-তৃতীয়াংশেরই বাস ঢাকা বিভাগে। আর সবচেয়ে কম দরিদ্র মানুষ থাকে সিলেট বিভাগে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), বিশ্বব্যাংক এবং জাতিসংঘের খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) যৌথভাবে বাংলাদেশের দারিদ্র্য মানচিত্র প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, দেশের দরিদ্র মানুষের ৩২ দশমিক ৩ শতাংশই বাস করে ঢাকা বিভাগে। আর সিলেটে বাস করে মাত্র ৫ দশমিক ৭ শতাংশ দরিদ্র মানুষ। বেশি মানুষ বাস করে বলেই ঢাকা বিভাগে গরিব মানুষের সংখ্যাও বেশি।
অন্যদিকে জেলাওয়ারি হিসাবে কুষ্টিয়ায় দরিদ্র মানুষের সংখ্যা সবচেয়ে কম, ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। আর সবচেয়ে বেশি কুড়িগ্রামে। এই জেলার ৬৩ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষই গরিব।
রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল বুধবার এই দারিদ্র্য মানচিত্র প্রকাশ করা হয়।
খানা আয়-ব্যয় জরিপে উল্লিখিত দারিদ্র্য হারের সঙ্গে দারিদ্র্য মানচিত্রের তথ্যে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। মানচিত্রটি প্রণয়ন করা হয়েছে খানা জরিপ ও আদমশুমারির পরিসংখ্যান সমন্বয় করে। খানা জরিপ অনুযায়ী, ২০১০ সালে দেশের দারিদ্র্য হার ছিল ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ। আর মানচিত্র অনুযায়ী, এ হার ৩০ দশমিক ৭ শতাংশ। বিশ্বব্যাংক সূত্র বলছে, দারিদ্র্য হারের গরমিলের কারণ হলো, খানা জরিপ করা হয় কিছু নির্ধারিত খানা ধরে। আর আদমশুমারিতে দেশের প্রত্যেক মানুষকে গণনা করা হয়। দারিদ্র্য মানচিত্র প্রণয়নে খানা জরিপ থেকে গরিব মানুষের শুধু মৌলিক চাহিদার উপাত্তগুলো নেওয়া হয়েছে। দেশের মোট জনসংখ্যার সঙ্গে খানা জরিপের মৌলিক চাহিদার উপাত্তগুলো সমন্বয় করতে গিয়েই দারিদ্র্য হারে কিছুটা হেরফের হয়েছে। আদমশুমারি অনুযায়ী দেশের মোট জনসংখ্যাকে দারিদ্র্য হার দিয়ে ভাগ করলে গরিব মানুষের হিসাব পাওয়া যাবে। সে অনুযায়ী দেশে এখন দরিদ্র মানুষের সংখ্যা প্রায় পাঁচ কোটি।
দারিদ্র্য মানচিত্রের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন প্রথম আলোকে জানান, গরিব মানুষের হার কমাতে বাংলাদেশে দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচিকেই প্রাধান্য দিতে হবে। গরিব মানুষের আয় বাড়লে দারিদ্র্য হার কমবে। গরিব মানুষের আয় বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। আর গরিবের সংখ্যা কমে যাওয়ার পর আয়-বৈষম্য কমানোর নীতি-সহায়তা দিতে হবে। বর্তমানে রাষ্ট্র ধনী মানুষকে আরও ধনী হওয়ার নীতি-সহায়তা দিয়ে থাকে।
একই রকম মত দিয়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষণা পরিচালক বিনায়ক সেন বলেন, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে কাজের সুযোগ অপেক্ষাকৃত বেশি। তাই সেখানে বেশি গরিব মানুষ ভিড় করে। যদি অন্য বিভাগগুলোতে বিনিয়োগ বাড়িয়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা যায়, তবে দারিদ্র্য হার কিছুটা দ্রুত গতিতে কমানো যেত। তাঁর মতে, দারিদ্র্য হার কমানোর প্রবণতা ত্বরান্বিত করতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। এ জন্য কৃষি, শ্রমঘন শিল্প ও সেবা খাতে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে হবে।
গতকাল প্রকাশিত দারিদ্র্য মানচিত্র অনুযায়ী, সার্বিকভাবে ঢাকা বিভাগের পর বেশি গরিব মানুষ বাস করে চট্টগ্রামে, ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ। এ ছাড়া রংপুর বিভাগে ১৫ শতাংশ, রাজশাহী বিভাগে ১১ দশমিক ৬ শতাংশ, খুলনা বিভাগে ১১ দশমিক ৪ শতাংশ এবং বরিশাল বিভাগে ৭ দশমিক ৩ শতাংশ।
কোনো বিভাগে বসবাসকারী মানুষের কত শতাংশ দরিদ্র, সে তথ্যেরও উল্লেখ রয়েছে মানচিত্রে। তাতে দেখা যাচ্ছে, রংপুর বিভাগে যত মানুষ বাস করে, তার ৪২ শতাংশই দরিদ্র। এরপর জনসংখ্যার দিক থেকে বেশি গরিব মানুষের বাস বরিশালে, ৩৮ দশমিক ৩ শতাংশ। এর বাইরে খুলনার মোট জনসংখ্যার ৩১ দশমিক ৯ শতাংশ, ঢাকার ৩০ দশমিক ৫ শতাংশ, রাজশাহীর ২৭ দশমিক ৪ শতাংশ, চট্টগ্রামের ২৬ দশমিক ১ শতাংশ এবং সিলেটের ২৫ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ দরিদ্র।
জেলা পর্যায়ের দারিদ্র্য পরিস্থিতিও উঠে এসেছে মানচিত্রে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ঢাকা বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দরিদ্র মানুষ বাস করে শরীয়তপুরে, ৫২ দশমিক ৬ শতাংশ আর কম ঢাকা জেলায়, ১৫ দশমিক ৭ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে দরিদ্র মানুষ বেশি চাঁদপুরে, ৫১ শতাংশ এবং কম নোয়াখালীতে, ৯ দশমিক ৬ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে বেশি দরিদ্র মানুষের বাস সিরাজগঞ্জে, ৩৮ দশমিক ৭ শতাংশ এবং কম বগুড়ায়, ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ। রংপুর বিভাগে বেশি দরিদ্র কুড়িগ্রামে, ৬৩ দশমিক ৭ শতাংশ এবং কম পঞ্চগড়ে, ২৬ দশমিক ৭ শতাংশ। খুলনা বিভাগে বেশি দরিদ্র সাতক্ষীরায়, ৪৬ দশমিক ৩ শতাংশ এবং কম কুষ্টিয়ায়, ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। সিলেটে দারিদ্র্য বেশি সুনামগঞ্জে, ২৬ শতাংশ এবং কম সিলেট জেলায়, ২৪ দশমিক ১ শতাংশ। বরিশালে বেশি দরিদ্র মানুষের বাস বরিশাল জেলায়, ৫৪ দশমিক ৮ শতাংশ আর কম বরগুনায়, ১৯ শতাংশ।
আবার ঢাকা বিভাগের দরিদ্র মানুষের ৫৫ শতাংশের বেশি বাস করে ওই বিভাগের ১০টি দরিদ্রতম উপজেলায়। অন্যদিকে ধনী ১০টি উপজেলায় মোট মানুষের মাত্র ৪ শতাংশ দরিদ্র। একইভাবে চট্টগ্রামের দরিদ্র মানুষের অর্ধেকই বাস করে ওই বিভাগের ছয়টি দরিদ্রতম উপজেলায়। আর ছয়টি ধনী উপজেলায় চার শতাংশের কম দরিদ্র মানুষ আছে।
সবচেয়ে দরিদ্র বিভাগ রংপুরেও এমন চিত্র দেখা গেছে। ওই বিভাগের ১১টি ধনী উপজেলায় দারিদ্র্যের হার জাতীয় গড়ের নিচে। অন্যদিকে দরিদ্রতম সাত উপজেলায় দারিদ্র্য হার জাতীয় গড়ের দ্বিগুণ। আবার সিলেটে যদিও দারিদ্র্য হার কম, তবু গোয়াইনঘাট উপজেলার ৫০ শতাংশ মানুষই গড় দারিদ্র্য হারের নিচে।
দারিদ্র্য হার বেশি আবার কৃষিকাজে মজুরিও কম—এমন অঞ্চলও চিহ্নিত করা হয়েছে দারিদ্র্য মানচিত্রে। রংপুর, টাঙ্গাইল, যশোর ও ফরিদপুর অঞ্চলে কৃষিকাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরা কম মজুরি পান। তাঁদের গড় মজুরির পরিমাণ প্রতিদিন ৮৬ থেকে ১০২ টাকা।
আবার দারিদ্র্যঘন এলাকার মানুষের প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করার হার কেমন, তার একটি চিত্রও তুলে আনা হয়েছে মানচিত্রে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বান্দরবান, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জামালপুর, শেরপুর, গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামের।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান। বিবিএসের মহাপরিচালক গোলাম মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব নজিবুর রহমান, ডব্লিউএফপির এদেশীয় পরিচালক ক্রিস্টা রেডার এবং বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ সালমান জায়েদী।
-

National news - মুটিয়ে যাওয়ার এতো সমস্যা!


বাংলাদেশের ৪ দশমিক ৫ শতাংশ শিশু স্থুলতার সমস্যায় ভুগছে
দিন দিন মুটিয়ে যাচ্ছেন? খুব দুশ্চিন্তা? মুটিয়ে যাওয়া বা স্থূলতা এখন শুধু আপনার একার সমস্যা নয়। স্থূলতা ইতিমধ্যেই একটি বৈশ্বিক সমস্যায় পরিণত হয়েছে। সাম্প্রতিক প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে এমনটা দাবি করেছে ম্যাকেঞ্জি গ্লোবাল ইনস্টিটিউট।

ওই গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবীর ২.১ বিলিয়ন বা ২১০ কোটি মানুষ স্থূলতার সমস্যায় ভুগছেন। বর্তমানে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় শতকরা ৩০ ভাগ মোটা। অবাক ব্যাপার হল, বিশ্বে মোটা মানুষের সংখ্যা অপুষ্টিতে ভোগা মানুষের সংখ্যার আড়াই গুণ। শুধু তাই নয়, স্থূলতা বিশ্বে মৃত্যু​র সংখ্যা শতকরা পাঁচ ভাগ বাড়ানোর জন্য দায়ী। আর ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে ২০৩০ সালে বিশ্বের ৪১ ভাগ মানুষ স্থূলতার সমস্যায় ভুগবেন।ওই গবেষণার আরও দেখার হয়েছে, যুদ্ধ আর ধূমপানের পর মুটিয়ে যাওয়ার কারণে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি আর্থিক ক্ষতি হয়। স্থূলতার কারণে প্রতিবছর দুই ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার বা এক কোটি ৫৬ লাখ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়, যা আফ্রিকা মহাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) সমান।আর বিশ্বের স্বাস্থ্য খাতে ব্যয়ের ২-৭ শতাংশ কেবল স্থূলতার পেছনেই ব্যয় করতে হয়। এই মুটিয়ে যাওয়া দুই ধরনের ডায়াবেটিকস হওয়ার প্রধান কারণ। ১৯৮৫ সালে স্থূলতা কারণে প্রতি ১০ লাখে ৩০ জন ব্যক্তি ডায়াবেটিকসে ভুগতেন। বর্তমানে তা ৩৮২ জন আর ২০৩৫ সালে দাঁড়াবে ৬০০ জনে। শঙ্কা এখানেই শেষ নয়। স্থূলতার সমস্যা এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে বইতে পারে। পুরুষের তুলনায় নারীদের ক্ষেত্রে এ ঝুঁকি আরও বেশি।
ম্যাকেঞ্জি গ্লোবাল ইনস্টিটিউটের গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, ধনী দেশগুলোতে স্থূলতার হার বেশি। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়ান, জার্মানির, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকান মতো মাথা পিছু উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে স্থূলতার হার বেশি।
স্থূলতার কারণে উৎপাদনশীলতা কমে যাওয়া এবং ব্যবসার ব্যয় বাড়ায় বৈশ্বিক জিডিপির ২ দশমিক ৮ ভাগ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। সবচেয়ে চিন্তার ব্যাপার হলো, উন্নত দেশের তুলনায় উন্নয়নশীল দেশগুলোতে স্থূলতার সমস্যা দ্রুত বাড়ছে। যেখানে ১৯৯০ থেকে ২০১০ এই ২০ বছরে উন্নত দেশগুলোতে স্থূলতা বেড়েছে ১৭ শতাংশ, সেখানে ওই সময়ের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে স্থূলতা বেড়েছে ৯০ শতাংশ! কিন্তু দুঃখের ব্যাপার হলো, ভয়াবহ রূপে ছড়িয়ে পড়া এই সমস্যার সমাধানে মাত্র পাঁচ শ কোটি ডলার খরচ করা হচ্ছে, যা স্থূলতার কারণে হওয়া বৈশ্বিক আর্থিক ক্ষতির মাত্র দশমিক ২৫ শতাংশ।
এদিকে বাংলাদেশের স্থূলতার চিত্র নিয়ে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটন। ১৯৮০ থেকে ২০১৩ -এই ৩৩ বছরে বাংলাদেশে স্থূলতার চিত্র ওই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। ওই গবেষণার তথ্য, ১৯৮০ সালে বাংলাদেশের শতকরা ৭ শতাংশ বয়স্ক ও ৩ শতাংশ শিশু স্থূল বা অতিরিক্ত ওজনধারী ছিলেন। ২০১৩ সালে এখন দেশে স্থূলতার বা অতিরিক্ত ওজনধারী বয়স্কদের হার শতকরা ১৭ ভাগ। এ ছাড়া দেশের ৪ দশমিক ৫ শতাংশ শিশু এ সমস্যায় ভুগছে।
সমস্যা বড় আকারে ছড়িয়ে পড়লেও সেটি দূর করার কিছু পথ বাতলে দিয়েছেন ম্যাকেঞ্জি গ্লোবাল ইনস্টিটিউটের গবেষকেরা। স্থূলতা দূর করতে তাঁরা ১৮ ধরনের পরামর্শ দিয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল নিয়মিত পর্যাপ্ত হাঁটা চলা, সাইকেল চালানো ও গণপরিবহন ব্যবহার করা। উচ্চ ক্যালরি যুক্ত খাবার যেমন ফাস্ট ফুড ও মদ জাতীয় পানীয় এড়িয়ে চলা এবং কাজের পরিবেশকে স্বাস্থ্য সম্মত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া স্থূলতা বা মুটিয়ে যা​ওয়া সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য বিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচি ও পারিবারিক শিক্ষার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়েছে ওই গবেষণায়।
-

National news - অসহায় প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা

À cette fin, la Justice Initiative fait les recommandations suivantes ...
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের ঢাকা সিটি কলেজ কেন্দ্র। গতকাল মঙ্গলবার বেলা পৌনে দুইটা। ওই কেন্দ্রের একটি ভোটকক্ষে গিয়ে দেখা গেল, প্রকাশ্যে লোকজন একের পর এক ব্যালটে সিল মারছেন। তবে কয়েকটি কক্ষে ভোট গ্রহণ বন্ধ। কারণ জানতে ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কক্ষে গিয়ে দেখা যায়, অসহায়ভাবে তিনি মুঠোফোন থেকে বিভিন্ন নম্বরে ফোন করছেন।
ওই প্রিসাইডিং কর্মকর্তার নাম এ জি এম সফিকুর রহমান। বেশ কয়েকবার চেষ্টার পর মুঠোফোনে কোনো এক কর্মকর্তাকে পেয়ে বললেন, ‘শহিদুল সাহেব, আমি ২৬৪ নম্বর কেন্দ্র থেকে বলছি। উচ্ছৃঙ্খল ছেলেপেলেরা এসে ব্যালট পেপার নিয়ে যেতে চাইছে। পুলিশ দায়িত্ব পালন না করে এদিক-সেদিক ঘোরাঘুরি করে। কিছু একটা করেন।’
এর কিছুক্ষণ পর দেখা গেল, ব্যাজে নূর নাম লেখা এক পুলিশ কর্মকর্তা মুঠোফোন নিয়ে প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কক্ষের সামনে থাকা এক লোককে দিলেন। এ সময় প্রিসাইডিং কর্মকর্তাও তাঁর পাশে ছিলেন। সঙ্গে কোনো ধরনের পরিচয়পত্র না থাকা ওই লোকটি ফোন নিয়ে বললেন, ‘ওসি সাহেব, সব ঠিক আছে।’
ওসিকে আশ্বস্ত করা লোকটি এগিয়ে এলেন। নিজের নাম জানালেন এ এম কামাল। বললেন, আওয়ামী লীগ-সমর্থিত মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন। এজেন্টদের সমন্বয়ক তিনি। সাংবাদিক পরিচয় শুনে বললেন, ‘আপনারা আর কী লিখবেন। বিএনপি তো নির্বাচন বর্জন করে চলে গেল। তাও ঠিকমতো লেইখেন। নেতিবাচক কথা আর কত লিখবেন?’ তিনি প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কাঁধে হাত রেখে বললেন, ‘তিনি (প্রিসাইডিং কর্মকর্তা) খালেদা জিয়ার চেয়েও বেশি দায়িত্ব পালন করেছেন। কার্যকর ভূমিকা রেখেছেন।’ এ সময় প্রিসাইডিং কর্মকর্তা পাশের একজনকে জানালেন তিনি নামাজ পড়তে যাচ্ছেন। নির্বাচনের পরিবেশ জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আপনারাই তো সব দেখছেন।’
সকাল আটটার দিকে সিটি কলেজ কেন্দ্রে ভোট দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ভোট দিয়ে যাওয়ার পর প্রায় দুই ঘণ্টা পরিস্থিতি ঠিক ছিল।
সিটি কলেজের কাছেই সেন্ট্রাল রোডে ঢাকা দক্ষিণের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের আইডিয়াল কলেজ কেন্দ্র। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ওই কেন্দ্রের একজন ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলামের দিকে ইঙ্গিত করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাঁর নেতৃত্বেই আওয়ামী লীগের লোকজন এই কেন্দ্র দখল করেছে। সকাল থেকে আমরা রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, র্যাব, পুলিশ—সবার সাহায্য চেয়েছি। কিন্তু কেউ কোনো সাহায্য করতে পারেননি।’
-

National news - কেন্দ্রে হাজি সেলিম, গোলাগুলি–সংঘর্ষ



বুলবুল ললিতকলা একাডেমি কেন্দ্র থেকে হাজি সেলিমকে সরিয়ে নিচ্ছেন তাঁর লোকজন। তিনি কেন্দ্রে ঢোকার পর আ.লীগ-সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয় l ছবি: সুমন ইউসুফ
পুরান ঢাকার ওয়াইজঘাটের (৩৭ নম্বর ওয়ার্ড) বুলবুল ললিতকলা একাডেমি ভোটকেন্দ্রে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত ও বিদ্রোহী প্রার্থীর লোকজনের সংঘর্ষে একজন গুলিবিদ্ধসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার ভোট চলাকালে স্থানীয় সাংসদ হাজি সেলিম সেই কেন্দ্রে ঢুকলে এই সংঘর্ষ বাধে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী আবদুর রহমান মিয়াজী (ঘুড়ি মার্কা) ও মো. শাহাবুদ্দীনের (ঠেলাগাড়ি মার্কা) লোকজনের মধ্যে সকাল থেকেই উত্তেজনা চলছিল। এই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের পরে পোগোজ স্কুল কেন্দ্রে সকালে ভোট গ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়। সুরিটোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়েও এই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।
বুলবুল ললিতকলা একাডেমি কেন্দ্র নিয়ে সোমবার রাত থেকেই উত্তেজনা চলছিল। ঘুড়ি মার্কার প্রার্থীর পক্ষ নিয়ে সাংসদ হাজি সেলিম সোমবার রাতে বুলবুল ললিতকলা একাডেমি কেন্দ্রে এলে সেখানে হইচই হয়। সাংসদ কেন্দ্রে না ঢুকেই ফিরে যান।
এরপর গতকাল বেলা পৌনে দুইটার দিকে দুই পক্ষের উত্তেজনার মধ্যেই হাজি সেলিম লোকজন নিয়ে বুলবুল ললিতকলা একাডেমি কেন্দ্রে ঢোকেন। এ সময়ই কেন্দ্রে বোমা বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দ শোনা যায়। এরপরই বিদ্রোহী প্রার্থী শাহাবুদ্দীনের লোকজন কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে অভিযোগ করেন, হাজি সেলিম তাঁদের বের করে দিয়ে ঘুড়ি মার্কার পক্ষে জাল ভোট দেওয়াচ্ছেন। শাহাবুদ্দীনের কর্মী নার্গিস আক্তার, মেরি ও সাজু বেগম অভিযোগ করেন, হাজি সেলিম তাঁদের মারধর করেছেন।
কেন্দ্রসংলগ্ন রাস্তায় দুই পক্ষের প্রার্থীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় আগ্নেয়াস্ত্র কোমরে গুঁজে একদল তরুণকে দৌড়াতে দেখা যায়। এদের কয়েকজন গুলিও ছোড়ে। এদের গোলাগুলির সময় লিটন নামের এক ব্যবসায়ী গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
পরে পুলিশ এসে ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশেরও একটি মাইক্রোবাস ভাঙচুর করে বিবদমান কর্মীরা।
এদিকে এ সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ছবি তুলতে গেলে একটি অনলাইন গণমাধ্যমের ফটো সাংবাদিককে এক পুলিশ কর্মকর্তা অস্ত্র উঁচিয়ে বলেন, ‘ছবি তুললে গুলি করব।’
বেলা দুইটার দিকে হাজি সেলিম কেন্দ্র ছেড়ে চলে যান। এর পরও উভয় পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা চলতে থাকে। কেন্দ্রে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়। আড়াইটার পরে কেন্দ্রে ভোট দিতে আসার জন্য প্রার্থীদের লোকজন ডাকাডাকি শুরু করেন। তবে এরপর কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল না বললেই চলে।
কেন্দ্রে ঢুকে মারধর ও জাল ভোটের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হাজি সেলিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি কিছু দেখিনি। আমি জানি না।’
-

National news - ক্ষুব্ধ হয়ে ব্যালট বাক্স ভাঙচুর

ক্ষুব্ধ হয়ে ব্যালট বাক্স ভাঙচুর
ভোট শুরুর আগেই ব্যালট পেপার ছিনতাই। পরে ভোট গ্রহণ শুরু না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অপর এক কেন্দ্রে হামলা চালান। ব্যালট বাক্স ভাঙচুর করেন। ফলে ঘণ্টা দুইয়েক তিন কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ বন্ধ। পরে এক কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত। এমনকি ক্ষুব্ধ ভোটারদের শান্ত করতে পুলিশ লাঠিপেটা পর্যন্ত করে।
এভাবেই পুরান ঢাকার সুরিটোলা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সারা দিনই ছিল উত্তেজনা। অবশ্য এর মধ্যেই ঢাকা মহানগর মেট্রোপলিটন কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া সেখানে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভোট শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু হচ্ছে।’ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি যখন এ কথা বলছিলেন, তখন হামলা ও জাল ভোটের কারণে সেখানকার দুই কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের তিনটি ভোটকেন্দ্র (৫৬৪, ৫৬৫ ও ৫৬৬) এই সুরিটোলা বিদ্যালয়ে। ভোটারসংখ্যা ৫ হাজার ৩২০। অনিয়মের কারণে ৫৬৫ নম্বর কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ কার্যক্রম স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল আটটায় ভোট গ্রহণ শুরুর আগেই সুরিটোলা বিদ্যালয়ের তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় ৫৬৫ নম্বর কেন্দ্র দখল করেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে যান। অবস্থা বেগতিক দেখে কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা শওকত আলী নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে ভোট গ্রহণ স্থগিত রাখেন। এখানে ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ২২৮।
পরে এই কেন্দ্রে ভোট শুরু না হওয়ায় সরকারদলীয় নেতা-কর্মীরা ওই ভবনের নিচতলায় ৫৬৪ নম্বর কেন্দ্রের ১ নম্বর বুথে হামলা চালান। ব্যালট বাক্স ভাঙচুর করেন। এতে করে এই কেন্দ্রসহ পাশের ভবনের আরেকটি কেন্দ্রে (৫৬৬) ভোট গ্রহণ বন্ধ করে দেওয়া হয়। নয়টার দিকে এ ঘটনার পর বেলা ১১টার দিকে পুলিশের সহায়তায় আবার ভোট শুরু হয় বাকি দুই কেন্দ্রে। তখনো ৫৬৫ নম্বর কেন্দ্রে ভোট দেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন ৫০-৬০ জন।
বেলা ১১টা ২০ মিনিটে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেন ভোটারদের উদ্দেশে বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ভোটকেন্দ্রটি স্থগিত করা হয়েছে। আপনারা বাড়ি চলে যান।’ এরপর ভোটাররা ক্ষুব্ধ হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে থাকলে পুলিশ তাঁদের লাঠিপেটা করে বের করে দেয়।
জানতে চাইলে স্থগিত হওয়া কেন্দ্র নিয়ে কোতোয়ালি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আহাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকালে ভোটকেন্দ্রে লোকজন উল্টাপাল্টা করছিল। তাই প্রিসাইডিং কর্মকর্তা সেটি বন্ধ করে দিয়েছেন।’ এ বিষয়ে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা স্বীকার করে গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘কিছু ব্যালট পেপার মিসিং ছিল। তাই ভোট নেওয়া যায়নি।’
-

National news - উত্তরে ছিল আ.লীগের নিয়ন্ত্রণ


কাফরুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ভেঙে যাওয়া ব্যালট বাক্স l ছবি: প্রথম আলো
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রায় সব কেন্দ্রই ছিল সরকারি দলের মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের নিয়ন্ত্রণে। তাঁরা বেলা ১১টার পর থেকেই কেন্দ্র দখল করে ব্যালট পেপারে নিজ দলীয় প্রার্থীর প্রতীকে গণহারে সিল মেরে বাক্সভর্তি করতে শুরু করেন। দুপুরে বিএনপির ভোট বর্জনের ঘোষণার পর তা অনেকটা প্রকাশ্য রূপ নেয়। এতে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা বা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কেউ-ই বাধা দেননি। বরং অনেকে সহযোগীর ভূমিকায় ছিলেন। এ সময় কেন্দ্র পর্যবেক্ষণে ও ছবি তুলতে গিয়ে গণমাধ্যম কর্মীরা বাধার মুখে পড়েন।সকাল আটটায় ভোট গ্রহণের শুরুতে সংখ্যায় কম হলেও কেন্দ্রে সাধারণ ভোটারদের উপস্থিতি দেখা গেছে। কিন্তু কেন্দ্রের ভেতরে-বাইরে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের আক্রমণাত্মক উপস্থিতির মুখে উপস্থিতি কমতে থাকে। তাঁদের গলায় ছিল আনিসুল হক ও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের দল-সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীর ছবিসংবলিত কার্ড। একপর্যায়ে এই কার্ডধারীরাই কেন্দ্রের সার্বিক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন। তাঁদের ঘুরেফিরে ভোট দিতে এবং দুপুরের পর গণহারে ব্যালটে সিল মারতে দেখা গেছে।ঢাকা উত্তরের মিরপুর এলাকায় কয়েকটি কেন্দ্রে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে, তবে তা ছিল সরকার দল-সমর্থিত ও ‘বিদ্রোহী’ কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে। প্রতিটি কেন্দ্রের বাইরের পরিবেশই ছিল একই রকম, যা দেখে মনে হয়েছে—ঢাকা উত্তরে মেয়র পদে একমাত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ-সমর্থিত আনিসুল হক। আর সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীও যেন শুধু সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সমর্থন পাওয়া প্রার্থী, আর কেউ নেই।
প্রথম আলোর ১৯ জন প্রতিবেদক ও আলোকচিত্রী উত্তর সিটি করপোরেশনের দেড় শতাধিক কেন্দ্র ঘুরে ভোটের এমন চিত্র দেখতে পান।
-

National news - তাবিথের এজেন্টকে টেনেহিঁচড়ে গাড়িতে তুলল পুলিশ

তেজগাঁও মডেল হাই স্কুলে সরকার সমর্থিত লোকজন তাবিথ আউয়ালকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেন l প্রথম আলো
সকাল ১০টা। মিরপুরের ১০ নম্বর গোলচত্বরের পাশের গার্লস আইডিয়াল ইনস্টিটিউট ভোটকেন্দ্র। মূল ফটকের একটু দূরে পুলিশের এক সদস্য এক যুবকের পেছন দিক থেকে প্যান্ট ও বেল্ট ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। তাঁকে কেন ধরে নিচ্ছেন, জানতে চাইলে ওই পুলিশ সদস্য বলেন, ‘পেছনে স্যারেরা আছেন, তাঁরা বলতে পারবেন।’
এর পরই ওই যুবককে পুলিশের একটি মাইক্রোবাসে তোলা হয়। পুলিশ সদস্যরা সাদাপোশাকে ছিলেন। তবে তাঁদের শরীরে পুলিশের জ্যাকেট এবং অস্ত্র ছিল। ওই গাড়িতে আগেই এক নারীকে বসিয়ে রাখা হয়েছে।
এই ঘটনার পর পুনরায় কেন্দ্রে প্রবেশ করে আবার দেখা যায়, মধ্যবয়সী এক ব্যক্তিকে এক পুলিশ সদস্য টেনে বের করছেন। কোন অপরাধে তাঁকে ধরে নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে মাঝবয়সী ওই ব্যক্তি কাঁদতে কাঁদতে বলতে থাকেন, ‘আমার কোনো অপরাধ নেই। আমি বিএনপির প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের এজেন্ট ছিলাম। এ জন্য আমাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে।’ এ সময় তাঁকে ধরে নিয়ে যাওয়া পুলিশ সদস্য বলেন, ‘ব্যাটা তুই এজেন্ট না, জাল ভোট দিছোস।’
পাকড়াও করা ওই দুই ব্যক্তির পেছনে যাচ্ছিলেন পুলিশের এক কর্মকর্তা। কথা বলতে চাইলে দ্রুত হেঁটে চলে যাচ্ছিলেন। দুই ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করে পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘এরা বাসের এজেন্ট। মামলা আছে। তাই ধরে নিয়ে যাচ্ছি।’
গার্লস আইডিয়াল ইনস্টিটিউটে দুটি ভোটকেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ৬ হাজার ৫০৫ জন। একটি বুথে গিয়ে দেখা যায়, তাবিথ আউয়ালের এজেন্ট নেই। এ ব্যাপারে পোলিং অফিসারদের কাছে জানতে চাইলে তাঁরা কোনো উত্তর দিতে পারেননি। এই সময় ওই বুথের এক পোলিং এজেন্ট বেরিয়ে যেতে অনুমতি চাচ্ছিলেন পোলিং অফিসারের কাছে। ওই এজেন্টের পিছু নিয়ে সামনে এগোতেই নিচু স্বরে তিনি বললেন, ‘বাসের এজেন্টকে ধরে নিয়ে গেছে পুলিশ। আমাকেও বলেছে বের হয়ে যেতে। আমি নাকি জামায়াতের লোক। তাই চলে যাচ্ছি। ভাই, আমার নাম-পরিচয় দিয়েন না।’ এই দুটি কেন্দ্রের অন্য বুথেও আওয়ামী লীগ-সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আনিসুল হকের ছাড়া অন্য প্রার্থীর এজেন্ট দেখা যায়নি।
এসব ঘটনা যখন ঘটছিল, একটি কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আবদুল কায়েম দরজা বন্ধ করে তাঁর কক্ষে বসে ছিলেন। কেন্দ্রের এজেন্টদের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিটি বুথে ১০-১২ জন করে এজেন্ট দিয়েছি। কে কোন দলের আর কে কে আছেন, তা আমি বলতে পারব না।’
গার্লস আইডিয়ালের দুটি কেন্দ্রে সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে ভোটারদের ভিড় দেখা যায়নি।
-

Popular Posts

Popular Posts

Popular Posts